তারিখ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নিবেদিত কর্মী

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নিবেদিত কর্মী
[ভালুকা ডট কম : ০৫ নভেম্বর]
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদার একজন অবিষ্মরণীয় ক্ষণজন্মা কর্মযোগী মানুষের নাম। তিনি সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের (রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গা) সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য। নিজ নির্বাচনী এলাকায় তৃণমূল পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে একজন পথিকৃৎ, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ও প্রাতঃস্মরণীয় জননেতা। অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত জনদরদী, স্বল্পভাষী, বিনয়ী, রুচিশীল ভদ্রলোক ও দুরদর্শী এই নেতার গণমুখী টেকসই উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকান্ড ইতিহাসের পাতায় ও এলাকাবাসীর অন্তরে অম্লান থাকবে চিরদিন। তিনি ১৯৫০ খ্রীষ্টাব্দের ১৮ জুন সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বাকাই গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন এবং ১৯১৪ খ্রীষ্টাব্দের ৬ অক্টোবর ইন্তেকাল করেন। তাঁর পিতা মরহুম ইস্রাফিল হোসেন তালুকদার, মাতা মরহুমা তুষ্টু বেগম।

গ্রামের পাঠশালা বাকাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তার শিক্ষা জীবন শুরু হয়। পরে বগুড়া জেলার  ছোনকা হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৬৮ খ্রীষ্টাব্দে এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হন রাজশাহী নিউ ডিগ্রী কলেজে। সেখানে কৃতীত্বের সাথে পাশ করার পর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৮ খ্রীষ্টাব্দে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে অনার্সসহ তিনি মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের ১১ ডিসেম্বর চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম সাইদুর রহমানের সুশিক্ষিত কন্যা মনোয়ারা সুলতানার সাথে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। ১৯৮৪ খ্রীষ্টাব্দে বিপুল ভোটে ধামাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সরকারি বরাদ্দের ত্রাণ বা রিলিফ এর পরিমাণ অপ্রতুল হলে নিজ তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী ক্রয় করে তা বিতরণ করতেন। 

১৯৭৫ খ্রীষ্টাব্দের ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বপরিবারে নৃশংস ভাবে কিছু বিপথগামী উচ্চভিলাশী সেনা সদস্যর হাতে নির্মম ভাবে নিহত হন। এই জঘন্যতম হত্যা কান্ডের মাধ্যমে প্রকৃত পক্ষে লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীনতাকেই হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানী ধারায় নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধের অমর স্লোগান “জয় বাংলাকে” বাদ দিয়ে জাতীয় স্লেগান করা হয় বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। এমনি ভাবে মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলো এক এক করে নির্বাসিত করার চেষ্টা চলতে থাকে। স্বাধীনতা প্রিয় জাতিকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে সামরিক শাসনের নানা ফরমানের মধ্যেমে বাক স্বাধীনতাও হরণ করা হয়। চাপা আক্রোশে ফুসছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী জনতা। সামরিক শাসন জগদ্ধল পাথরের মত চেপে বসে ছিল জাতির বুকে। এমতাবস্থায় মানুষের মুক্তির জন্য কিছু একটা করতে হবে তা বুঝতে পেরেছিলেন ইসহাক হোসেন তালুকদার। যেহেতু প্রকাশ্যে কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম করা যাচ্ছে না তাই সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে রায়গঞ্জের ভূইয়াগাঁতীতে তিনি ‘অন্বেষা সাংস্কৃৃতিক গোষ্ঠি’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে কর্যক্রম শুরু করা হয়। অন্য চার জন সদস্য ছিলেন কে.এম আজিজুল হক, রাজকুমার দাস, আলী আশরাফ মিয়া ও অসীম কুমার চৌধুরী।

অন্বেষা সাংস্কৃৃতিক গোষ্ঠি প্রতিষ্ঠার অল্প দিনের মধ্যেই উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক সুধিজন এই সংগঠনের সঙ্গে যোগ দিলেন। সংগঠনটি অরাজনৈতিক বলা হলেও সাংস্কৃতিক ছদ্মাবরণে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। ইসহাক হোসেন তালুকদার তখন পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (পরবর্তীকালে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ হিসাবে এর রূপান্তর হয়।) অন্বেষা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয় উল্লাপাড়া থেকে জেনারেটর সহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এনে আলোর ব্যবস্থা করে দিতেন। প্রচলিত পাকিস্তানী ভাব ধারায় চালিত রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে আসার লক্ষ্যে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির কাছে পৌঁছানোর জন্য অণ্বেষা সাংস্কৃৃতিক গোষ্ঠির পক্ষ থেকে ‘অণ্বেষা’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। যার মাধ্যমে দেশের বিশিষ্ট লেখকের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্বলিত লেখা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ। ইসহাক তালুকদারকে সভাপতি করে একটি সম্পাদনা পরিষদও গঠন করা হয়। যার সম্পাদক ছিলেন সংগঠনের অন্যতম সদস্য সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে.এম.আজিজুল হক। সাহিত্য সাময়িকীতে বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি মহাদেব সাহা, কবি সমুদ্রগুপ্ত, বিজ্ঞানী ডঃ আব্দুল্লাহ আলমুতি সরফুদ্দিনসহ অনেক প্রতিথযশা লেখক লেখা দিয়ে সাময়িকীটিকে সমৃদ্ধ করেছিলেন। আমি তখন দৈনিক ইত্তেফাকের কচিকাঁচার আসর থেকে বেরিয়ে সবে বগুড়া থেকে তদানিন্তন দৈনিক উত্তরাঞ্চল পত্রিকায় লিখতাম। আমি, দূর্জয় বাংলার সম্পাদক মোস্তফা নুরুল আমিন, ডাঃ শচীন্দ্রনাথ বসাক, কবি এস এম আব্দুর রশিদ, রাজকুমার দাস, আলী আশরাফ মিয়া, শাহআলম আকন্দসহ আরো বেশ কয়েকজন মিলে আমরা নিয়মিত লেখা দিতাম। দেশের বিশিষ্ট লেখকেরাও লেখা দিতেন।

সাংস্কৃতিক মনা, ধৈর্যশীল, স্থিরচিত্তের বন্ধুবৎসল মানুষ ইসহাক হোসেন তালুকদার অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে কৌশলে অণ্বোষায় এসব লেখা প্রকাশ করতেন এবং এলাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশিত সাময়িকী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতেন। প্রকাশনার খরচ যোগাড় করতে তিনি আমাদের সাথে নিয়ে ঐ ম্যাগাজিন সমমনা পাঠকদের নিকট ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন। তিনি একাধারে একজন ভাল লেখক, ভাল ফুটবল ও ভলিবল খেলোয়ার অপরদিকে এসব খেলায়  জাজমেন্টের ক্ষেত্রে একজন ভাল রেফারিও ছিলেন। জ্ঞানপিপাসু এই মানুষটির ছিল জানার অদম্য আগ্রহ। তিনি যা জানতেন সঠিকভাবে জানতেন। তিনি রবীন্দ্র সংগীতের একজন অসম্ভব রকমের ভক্ত ও ভাল শিল্পী ছিলেন- তার গাওয়া রবীন্দ্র সংগীত ‘আজি বিজন ঘরে....., দুরদেশী সেই রাখাল ছেলে...., জীবন-মরণে সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে....’ তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম......, নিপুনভাবে পরিবেশিত এসব গান আজো তদানিন্তন শ্রোতাদের অন্তরের রেকর্ড হয়ে আছে। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী ইসহাক হোসেন তালুকদার ছিলেন- দেশপ্রেমিক, সৎ, সত্যবাদী,  উদার, পরপোকারী ও নিরাহংকার ব্যক্তি। তিনি কোন কাজ করার আগে উত্তমরূপে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতেন এবং যা করতে চাইতেন তা করেই ক্ষান্ত হতেন। জীবনে কখনো তিনি কোন অবস্থাতেই সঠিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন এলাকায় অনুস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

তিনি প্রতিশোধ নিতে জানতেন না। ১৯৮১ খ্রীষ্টাব্দে রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছিতে তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ডাঃ এম.এ মতিনের একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালীন সময়ে রাত ৯ টার দিকে কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে যেন শাসক গোষ্ঠি সমর্থকদের মাথায় বাজ পড়ে। মন্ত্রীকে বোঝানো হয় যে, জনসভা ভন্ডুল করার উদ্দেশ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ইসহাক হোসেন তালুকদারের আদেশেই বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়েছে। আসলে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই সাময়িক ভাবে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু কার কথা কে শোনে। প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান না করেই ইসহাক হোসেন তালুকদারের নামে মামলা দায়ের করা হলো। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়নাও জারি করা হয়। এইটা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম রাজনৈতিক মামলা। বিনা অপরাধে এ মামলায় তিনি কিছুদিন করাভোগ করেছিলেন। এলাকাবাসীর প্রবল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তাকে জেলখানা থেকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। পরে অভিযোগের সত্যতা না থাকায় মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। তার আইনজীবি তাকে মিথ্যা মামলায় হয়রাণি করার প্রতিবাদে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার পরামর্শ দিলেও এই নির্বিরোধী মানুষ তা করেননি।

ছাত্র জীবনে ইসহাক হোসেন তালুকদার বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের তদানিন্তন বাগ্মী নেত্রী অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর গ্রুপে ১৯৬৮ খ্রীষ্টাব্দে অংশ গ্রহন ও ১৯৬৯ এর গণ-আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহন করেন। ১৯৭০ খ্রীষ্টাব্দের নির্বাচনে আ’লীগের পক্ষে ব্যাপক গণসংযোগ ও মাঠ পর্যায়ে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ১৯৭২ খ্রীষ্টাব্দে আ’লীগের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত থেকে কাজ করেছেন। ১৯৭৯ খ্রীষ্টাব্দে পাবনা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর (বর্তমানে সিরাজগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৮১ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ঐ পদে বহাল থাকেন। ১৯৮০ খ্রীষ্টাব্দে ধামাইনগর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ খ্রীষ্টাব্দে বিপুল ভোটে ধামাইনগর ইউপি’র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ৯ম জাতীয় সংসদের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্ম সংস্থান বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় পাঠাগার বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১০ম জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিরও সদস্য ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি,  বিভিন্ন সামাজিক ও শ্রমজীবি সংগঠনের উপদেষ্টা হিসাবে থেকে প্রতিষ্ঠান সমূহের সমৃদ্ধি সাধনে তিনি নিরলস কাজ করে গেছেন। তিনি ১৯৮৬ খ্রীষ্টাব্দে জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি পদ লাভ করেন এবং একই বছরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৬ থেকে ২০১৪ খ্রীষ্টাব্দের পর্যন্ত আ’লীগের পক্ষ থেকে মোট ৫ বার মনোনয়ন লাভ করেন। মাঠ পর্যায়ে কতিপয় উচ্চাভিলাশী কর্মীর দ্বি-মুখী নীতির কারণে তিনি ২ বার অতিসামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন এবং ৩ বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অর্ধলক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে তিনি বিএনপির হেভি ওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ১৯৮১ খ্রীষ্টাব্দে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ওয়াজেদ দেশে প্রত্যাবর্তন করে শক্ত হাতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাল ধরেন এবং দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর সংসদের ভিতর ও বাইরে আ’লীগের চলমান আন্দোলনে নতুন রূপ নেয়। এসময় আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন কর্মী ও স্থানীয় পর্যায়ে অদ্বিতীয় নেতা হিসাবে গণ্য হন। ১৯৮৫ খ্রীষ্টাব্দে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি হিসাবে তিনি এলাকায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ খ্রীষ্টাব্দে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে রওশনুল হক মতি মিয়ার জন্য এলাকায় একজন দক্ষ সংগঠক হিসাবে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে তিনি আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিশেষ নজরে আসেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত অনুসারী, বঙ্গবন্ধুকন্যার সুযোগ্য কর্মী ও আওয়ামীলীগের জন্য স্থানীয় পর্যায়ের অদ্বিতীয় অভিভাবক।

তিনি যখন ছাত্র, তখন গ্রামঞ্চলে অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করতেন। অনেক মানুষ দু’বেলা পেটপুরে খেতে পেতনা। এ সময়ে অর্থাভাবে অনেক পরিবারের মেধাবী সন্তানদের উচ্চশিক্ষা গ্রহন করা সম্ভব ছিল না। প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে কন্যাদায় গ্রস্থ পিতা দ্বারে দ্বারে সাহায্যের জন্য হাত বাড়াতেন। তিনি তার সমমনা বন্ধুদের নিয়ে অসহায় হত দরিদ্র বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের নানা ভাবে সহযোগিতা করতেন। সাথীদের নিয়ে খাল-বিল ও বিভিন্ন উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে তা দিয়ে কন্যাদায় গ্রস্থ পিতার বাড়িতে বিয়ে অনুষ্ঠানে বরযাত্রীদের খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা  করতেন। পরে সংসার জীবনে এসে নিজের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করেও সে অর্থ বিপদগ্রস্থ অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে দান করেছেন। ফলে তার কোন অর্থ সঞ্চয় ছিল না। অপরদিকে গণমানুষের হৃদয়ে তার ভালবাসার সঞ্চয় গড়ে উঠতে থাকে।

নির্বাচনে চিরাচরিত কর্মীদের অর্থের যোগান দেওয়ার একটা রেওয়াজ আমাদের দেশে চলমান আছে। কিন্তু ইসহাক হোসেন কখনো তা দিতে পারতেন না। তার কর্মীরাও যে আশায় কোন কাজ করতেন না। তারা নিজ নিজ পকেটের টাকা খরচ করে তাদের প্রিয় নেতার জন্য রাতের পর রাত জেগে নির্বাচনী মাঠে কাজ করতেন। তিনি মাটির মানুষের সাথে এতটাই মিশে ছিলেন যে অসংখ্য দরিদ্র মানুষ নিজেরা চাঁদা করে অর্থ সংগ্রহ করে তার নির্বাচনী মাঠে কাজ করতেন। এব্যাপারে স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠি দরিদ্র লোকেরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। একবার দৈনিক ইত্তেফাকের স্থানীয় এজেন্ট রায়গঞ্জের জয়ানপুর গ্রামের সোনাউল্লাহ তার পত্রিকার বিক্রির একমাত্র বাহন বাইসাইকেল বিক্রি করে সেই অর্থে তার প্রিয় নেতা ইসহাক হোসেন তালুকদারের নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করেছিলেন। এরকম অনেক ভক্ত অনুসারী আছেন যাদের নাম সংকুলান এই ক্ষুদ্র পরিসরে সম্ভব নয়।

তার দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে মরহুমের সুযোগ্য সহধর্মিনী মনোয়ারা সুলতানা জানান- মরহুম ইসহাক হোসেন তালুকদার ছিলেন-সর্বজনীন সেবব্রতী মানুষ। তার ধ্যান ছিল এলাকার জনগণ ও তাদের উন্নয়ন। তিনি নিজের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করেও দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করেছেন। অসহায় রোগাক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার সেবার ব্যয়ভার বহন করাসহ কন্যাদায়গ্রস্থ পিতা-মাতাকে আর্থিক ও সামাজিক সহায়তা দান করেছেন। জনসেবার জন্য সকালে বের হয়ে তিনি গভীর রাতে বাড়ি ফিরতেন। তার সাথে সকল স্তরের জনতা যেকোন সময়ে তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা বলে প্রযোজনীয় সহযোগিতা নিতে পারতেন। তাকে কখনো সাধারণ মানুষের প্রতি তিনি বিরক্ত হতে দেখেননি। তার নিজের ব্যবহারের জন্য কোন ডায়নিং টেবিল ছিল না। নিজের শোবার ঘরে (মাটির দেওয়াল ঘর) তার পড়া-লেখার টবিলেই খাবার খেতেন এবং খাবার গ্রহনের সময় কোন সাক্ষাৎ প্রার্থী এলে তাকে বাইরের ঘরে বসিয়ে না রেখে তাদের পাশে ডেকে কথা বলতেন। আর তাদের আপ্যায়ন করতেও তিনি পছন্দ করতেন। তিনি ছিলেন নির্বিরোধী মানুষ। বিরোধী দলের সমর্থকরাও তাকে সীমহীন সম্মান ও বিশ্বাস করতেন। তিনি গণমানুষের জন্য এতটাই উন্মুক্ত ছিলেন যে পরিবারের সদস্যদের জন্য অন্য সাধারণদের মত তিনি কখনো সময় দিতে পারতেন না। মিসেস ইসহাক তার দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে বলেন-৪০ বছরের দাম্পত্য জীবনে মাত্র ৪২ দিন তিনি স্বামীকে একান্তে পেয়েছেন। আর সে সুযোগ তার হয়েছিল দু’জনে এক সাথে হজ্বব্রতে যাওয়ার অছিলায়।

তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত চিত্র  ঃ (২০০৯-২০১৪)
সিরাজগঞ্জ-৩ নির্বাচনী এলাকা রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলায় টেকসই উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের চেষ্টায় ইসহাক হোসেন তালুকদার নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। জনগণকে  প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে সচেতন ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে টেকসই উন্নয়ন করা সম্ভব বলে তিনি বিশ্বাস করতেন। তিনি নিজ উদ্যোগে এলাকায় অনেক স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এলাকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাংস্কৃতিক সচেতন করার লক্ষ্যে তিনি ২০১২ খ্রীষ্টাব্দে রায়গঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেন।

সূত্রমতে গত সাড়ে ৬ বছরে (২০০৯-২০১৪) তার নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ২শ’কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ ও সংস্কার, গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ, পুণঃ নির্মাণ ও ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান শ্মশান ঘাট, হাট-বাজার উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, মন্দির, মসজিদ সংস্কার ও মাটি ভরাট, খাল কাটা, কৃষি সেচ প্রকল্পের ড্রেন নির্মাণ, মজা পুকুর খনন, বিশুদ্ধ পানীয় জলের নিমিত্ত নলকূপ স্থাপন, কমিউনিটি ক্লিনিক মেরামত, হাসপাতাল ভবন ও কোর্য়াটার মেরামত, ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র ও উপজেলা সার্ভার স্টেশন স্থাপন, স্যানিট্রেশন, পয়ঃ নিস্কাশন, আশ্রায়ন, গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ ও মাটি ভরাটসহ ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ। এছাড়াও অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় প্রায় ১০০০টি প্রকল্প, কাবিখার আওতায় ৭২০ টি প্রকল্প এবং টিআরের মাধ্যমে মোট আড়াই হাজার প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০কোটি টাকা। স্থানীয় সরকারের (ইউনিয়ন পরিষদ) রাজস্ব আয়ের এক শতাংশের খাত থেকে নির্বাচনী এলাকার ১৭ টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি), পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প, জিবিআরপি ও জিবিআইসি প্রকল্প সহ ১১ টি কর্মসূচীর আওতায় ৮৮৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, পুণঃ নির্মাণ, বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ ও সংস্কার সহ ৭৬২টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়াও কৃষি, স্যানিট্রেশন, পয়ঃ নিস্কাশন, ড্রেন নির্মাণ, নলকূপ স্থাপন, হাট উন্নয়নসহ প্রায় ২১১২ টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। বাস্তবায়িত হয়েছে আরো প্রায় ৩ কোটি টাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার একর ফসলী জমি জলাবদ্ধতা মুক্ত করে আবাদযোগ্য করতে খাল খনন করা সহ আন্ডারড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার চাহিদার চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার মেঃ টন খাদ্য শস্য বেশি উৎপাদন হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। বর্তমান সরকারের সময়কালে এই এলাকায় প্রায় ২৫ টি গ্রাম বিদ্যুতায়ন হওয়া সহ ১১ হাজার পরিবার নতুন সংযোগ পেয়েছে।

তিনি এক প্রেস বিফিংয়ে বলেছিলেন-“আমি যখন রাজনীতি করি তখন আ’লীগের কর্মী। আর  যখন সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করি তখন আমি রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও সলঙ্গার সাড়ে ৫ লাখ মানুষের অভিভাবক ও সেবক। তিনি আরো বলেছিলেন-আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে ২০১৮ সালের মধ্যে তার নির্বাচনী এলাকার সকল পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। আর ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।” তার রাজনৈতিক উত্তরসুরির বিষয়ে প্রশ্ন করলে- তিনি তার কনিষ্ঠপুত্র এ্যাড. ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমনকে নিজের যোগ্য রাজনৈতিক উত্তরসুরি হিসাবে দেখে যেতে চান বলে জানিয়েছিলেন। তার এই স্বপ্ন সাধ তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অনেকেই অবগত আছেন বলে তিনি দাবি করেছিলেন। গত ২০১৪ খ্রীষ্টাব্দের ৬ অক্টোবর তার অকাল মৃত্যুর কারণে তিনি এর বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারেননি।

ঐ বছরে ১৩ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদে চতুর্থ অধিবেশনে সংসদ সদস্য ইসহাক হোসেন তালুকদারের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুম ইসহাক হোসেন তালুকদারের আত্নার মাগফেরাত কামনা করে বলেছেন, তিনি ছিলেন একজন মাটির মানুষ, নিবেদিত প্রাণ রাজনীতিবিদ। তার মতো একজন নিবেদিত প্রাণ, নির্লোভ রাজনীতিবিদকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের যেমন ক্ষতি হয়েছে তেমনি দেশেরও ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ৬৬-এর ৬-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন এবং ৭১-এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দুর্গম এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের সাথে থাকা এবং মানুষের সেবা করা ছিল তার চরিত্রের একটা বড় গুণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জনের পরও তিনি গ্রামের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে ছিলেন এবং গ্রামের মানুষের সাথে থেকে রাজনীতি শুরু করেন। প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ধাপে ধাপে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তিনি অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী ও নম্র একজন মানুষ ছিলেন। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে সংসদ সদস্য হয়ে রাজধানীতে এলেও নগরের হাওয়া তার গায়ে লাগেনি। তিনি মাটি মানুষের নেতা ছিলেন। মাটি মানুষের পাশেই সব সময় ছিলেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু চাহিদা থাকে। কিন্তু এই একটি মানুষ যাকে কখনো কিছু চাইতে দেখিনি। যাকিছু চাইতেন তা তার এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য চাইতেন। তার ব্যক্তিগত কোন দাবি ছিল না। তিনি সত্যিকার মানুষের কল্যাণ চাইতেন। তাকে যখন যে পরামর্শ দেয়া হতো কোনো ধরণের দ্বিমত না করে তা নির্ধিদ্বায় মেনে নিয়ে নীরবে কাজ করে যেতেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইসহাক তালুকদার এতো অল্প বয়সে চলে যাবেন তা কল্পনাও করতে পারিনি। এ রকম একজন নির্লোভ নিবেদিত প্রাণ নেতাকে হারালাম, যিনি আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেছিলেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সত্যিকার একজন আদর্শের সৈনিক। যে সত্যিকার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং তার এলাকার কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের নেতা। তাদের জন্য তিনি কাজ করেছেন, সব সময় তাদের পাশে থেকেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে চাই। আর সোনার বাংলা গড়ার জন্য যে সোনার মানুষ প্রয়োজন ইসহাক হোসেন তালুকদার এধরনের একজন সোনার মানুষই ছিলেন। তিনি এদেশের মাটি ও মানুষকে ভালবেসে তাদের কল্যাণে রাজনীতি করেছেন।

তিনি বলেন, ইসহাক হোসেন তালুকদার একদিকে যেমন মানুষের সেবা করেছেন অন্যদিকে তিনি ছিলেন একজন পরহেজগার। ধর্ম পালনে তার যে নিবেদিতপ্রাণ তাও লক্ষ্যণীয় ও অনুকরণীয়। বিভিন্ন সময়ে তিনি প্রতিপক্ষ দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন কিন্তু কখনো আদর্শচ্যূত হননি, লোভ-লালসা তাকে নাগালে পায়নি।

তার মৃত্যুর পর মরহুমের শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী ইসহাক হোসেন তালুকদারের বাকাই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তিনি জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবে তার বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন - ইসহাক হোসেন তালুকদার ছিলেন আপদমস্তক ভদ্রলোক। আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার বাড়িতে গিয়ে মনে হয়নি সেটা কোন এমপি’র বাড়ি। সেটা ছিল  নিতান্তই গ্রাম বাংলার একজন সাধারণ কৃষকের বাড়ি।

ইসহাক হোসেন তালুকদার ছিলেন- টেকসই উন্নয়নের সকল কর্মকান্ড সফলভাবে বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে একজন দক্ষ ও দুরদৃষ্টি সম্পন্ন কর্মযোগী প্রাতঃস্মরণীয় ক্ষণজন্মা পুরুষ। তিনি ছিলেন দশপ্রেম, সততা, ভদ্রতা, বিনয়, কর্মনিষ্ঠতা ও জনকল্যাণ কাজে একাগ্রতায় দল ও দেশের জন্য একজন অন্যতম ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। তার অম্লান স্মৃতি এলাকাবাসী ও তার অসংখ্য ভক্ত শুভানুধ্যায়ী চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ব্যাক্তিত্ব বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই