তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় মঙ্গল খাল পুনঃ খননে খুশি কৃষকরা

নওগাঁয় মঙ্গল খাল পুনঃ খননে খুশি কৃষকরা
[ভালুকা ডট কম : ০২ জুলাই]
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ‘মঙ্গল খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিঃ’ এর টেইসই প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি’র মাধ্যমে খাল পুনঃ খনন করা হয়েছে। খাল খনন হওয়ায় উপকৃত হচ্ছেন হাজারো কৃষক ও সমিতির সদস্যরা। পৌনে ১০ কিলোমিটার খালের মধ্যে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত খাল খনন করা হলেও বাকী খাল পুনঃ খননের দাবী জানিয়েছেন সদস্যরা।

জানা গেছে, ধামইরহাটের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত মঙ্গল খাল। সর্বশেষ ২০০৪-০৫ সালে খালটি খনন করা হয়। এরপর দীর্ঘ ১৩ বছরে খালটি খনন না করায় পলিজমে ভরাট হয়ে যায়। এতে করে সামান্য পানিতেই খাল উপচে পানি প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমি ও বাড়িঘর ডুবে যেতো। এই সমস্যা থেকে উত্তোরনের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ‘টেকসই ক্ষুদ্রকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খনন কাজটি করে ‘ধামইরহাট মঙ্গল খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড। মঙ্গল খাল পৌনে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার ঘুকসি খালের মূখ জিরো পয়েন্ট মঙ্গল খালের মূখ থেকে মালাহার গ্রামে ৪ কিলোমিটার খালটি পুনঃ খনন করা হয়। খাল খনন হওয়ায় উপজেলার উমার ইউনিয়নের মঙ্গলকোটা, তালঝাড়ি, বিয়াডাঙ্গা সহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক সুবিধা ভোগ করবেন। এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে খননকৃত খালের উপড় দিয়ে পারাপাড়ের জন্য কয়েকটি বাঁশের সাঁকোও নির্মান করা হয়েছে।

সুন্দ্রা গ্রামের সুবধাভোগী ও কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, দীর্ঘ দিনে খালে পলি জমায় ভরাট হয়ে গেছে খালটি। এতে খাল থেকে পানি উপচে প্রবাহিত হয়ে ফসল ডুবে যায়। এছাড়া বন্যায় বাড়িঘরও ডুবে যায়। গত দুই মাস হলো খালটি খনন করা হয়েছে। এর আগে খালে পানি থাকতো না। আমার ৭ বিঘা জমিতে আবাদ করতে গিয়ে বড়ই সমস্যার মধ্যে পড়তো হতো। কিন্তু খাল খননের পর সুবিধা হয়েছে। এবারে অনাবৃষ্টিতে খাল থেকে সংগৃহিত পানি দিয়ে আউশের আবাদ করতে পারব।

সুবিধাভোগী ও কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, বিগত বছরের পানি সংকটে আবাদ করতে কষ্ট হতো। আষাঢ়ের ভরা মৌসুম, এখনও বৃষ্টি নাই। এই খাল থেকে পানি নিয়ে ধানের চারা (বিছন) রোপন করেছি। এছাড়া জমিতে পানি দিয়ে হাল চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এই খাল খননের ফলে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি।

বিহারীনগর গ্রামের উপকারভোগী সেলিম মাহমুদ রাজু জানান, এবারে খাল পুনঃ খননটি দৃশ্যমান হয়েছে। এই মঙ্গল খালের আওতায় তার ১২ বিঘা জমি আছে। খালটি দির্ঘদিন পর পুনঃ খনন হওয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হবো। খালের দুইপারে অনেকটা রাস্তার মতো হচ্ছে। এছাড়া খালের এপাড় থেকে ওপাড়ে যেতে মাঝে মধ্যে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে দেয়া হয়েছে। যাতে আমাদের উৎপাদিত ফসল অনায়াসেই ঘরে তুলতে পারি।

মঙ্গল খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি নুরুজ্জামান বলেন, উমার ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক এই খাল থেকে সুবিধা ভোগ করবেন। খালের নিকটে যারা বসবাস করেন তারাই বেশি সুবিধা ভোগ করবেন। রবি মৌসুমে খাল থেকে পানি নিয়ে চাষাবাদে সুবিধা পাওয়া যাবে। এছাড়া নিজেদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে খালে আমরা মাছ চাষ ও হাঁস পালনের উদ্যোগ নিবো। বাকী যে ৬ কিলোমামিটার খাল আছে সেটুকুও যেনো সরকার পুনঃ খনন করে দেন এই দাবী করেন তিনি।

সার্ভেয়ার হাসান তৌফিক ইমাম বলেন, ঘুকশি খাল জিরো পয়েন্ট থেকে মঙ্গল খালের প্রথম ২ কিলোমিটার খালের নিচের প্রস্থতা ১৪ ফুট এবং ২ কিলোমিটার শেষ থেকে পরের ১ কিলোঃ ৮শ মিটার পর্যন্ত নিচের প্রস্থতা ১০ ফুট এবং  শেষের ২শ মিটার খালের নিচের প্রস্থতা ৬ ফুট পর্যন্ত। এভাবে ৪ কিলোমিটার খাল পুনঃ খনন করা হয়েছে। খালের গভীরতা জিরো থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ৪/৫ ফুট পর্যন্ত করার নিয়ম। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে প্রস্থতার দিকে খনন একটু বেশি করা হয়েছে।

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী আলী হোসেন বলেন, সমিতির সদস্যরা খাল পুনঃ খননের জন্য একটি রেজুলেশন তৈরী করে আমার কাছে জমা দেন। সেটি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর দাখিল করা হলে খাল পুনঃ খননের বরাদ্দ আসে। সে প্রেক্ষিতেই খালটি পুনঃ খনন করা হয়। তিনি আরো বলেন, সমিতির ২২ টি শ্রমিক দল চুক্তিবদ্ধ হয়ে এই খাল পুনঃ খননের কাজ সম্পন্ন করেন। সমিতির  ৫২২ জন সদস্য এই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। খাল পুনঃ খননে স্ক্যাবেটর দিয়ে ৭০ শতাংশ এবং সুবিধাভোগী শ্রমিকদের দিয়ে ৩০ শতাংশ কাজ করা হয়েছে।

খাল খননের ফলে ওই এলাকার কৃষির প্রসার ঘটানো, মৎস্য চাষ ও হাঁস পালনসহ অন্যান্য সুবিধা পাবে। এতে করে সমিতির সদস্যের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। এছাড়া বাঁকী যে খাল রয়েছে নতুন করে বরাদ্দ আসলে সেগুলো পুনঃ খনন করা হবে। তবে একটি পক্ষ আমাদের কাছে সুবিধা না পেয়ে কাজের বিষয় নিয়ে নানা গুজব রটিয়েছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই