তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় হাট ইজারায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত

নওগাঁয় চকগৌরী হাট ইজারায় সরকার ২১ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত
[ভালুকা ডট কম : ২৫ জুলাই]
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ‘চকগৌরী হাট’ থেকে চলতি বছরে সরকার প্রায় ২০লাখ ৫৫ হাজার টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ঠিকাদারদের সিন্ডিকেটের কারণে এমনি হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতনরা। প্রথমদিকে হাটটি ইজারা না হওয়ায় প্রশাসন থেকে চারমাস খাস ভাবে হাট থেকে খাজনা আদায় করা হয়। আর এসুযোগে হাট থেকে খাজনা আদায়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা গবাদিপশু কেনাবেচায় অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার হাটবাজার শাখা সূত্রে জানা যায়, বাংলা বছর হিসেবে প্রতি বছরের বৈশাখ মাসে হাট-বাজার ইজারা দেয়া হয়। উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের ‘চকগৌরী হাট’ গত বাংলা ১৪২৫ সালে ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৫ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ১৪২৬ সালে হাটটি ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৫ টাকায় ইজারা দেয়ার জন্য পরপর চারবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু কোন ইজারাদার হাট নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেননি। পরবর্তিতে পঞ্চমবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলে ভীমপুর ইউনিয়নের ‘৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার এনামুল হক সুজন ২৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা’ দিয়ে হাটটি ইজারা নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইতোমধ্যে হাটটির বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা প্রশাসনকে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। আগামী রোববার হাটটি ইরাজাদারকে হস্তান্তর করা হবে বলেও জানা গেছে।

একটি গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সিন্ডিকেটের কারণে সরকার এবছর প্রায় ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলো বলে মনে করছেন সচেতনরা।যেহেতু ১৪২৬ সালে হাটটি ইজারা হয়নি। সেহেতু বৈশাখ মাস থেকে বর্তমান শ্রাবন মাস (চারমাস) সরকারি ভাবে হাট থেকে খাস আদায় (খাজনা) করা হয়। রবি ও বৃহস্পতিবার হাটের দিন হলেও রবিবার বসে পশুর হাট। হাট থেকে যে খাজনা আদায় হয় তা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। হাট থেকে খাজনা আদায়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা গবাদিপশু কেঁনাবেঁচায় অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

রোববার হাটে গিয়ে দেখা যায় খাজনা (টোল) আদায়ের তালিকা প্রকাশ্য স্থানে টাঙানোর নিয়ম থাকলো তা দেখা যায়নি। সরকারি ভাবে খাজনা আদায়ে গরু ৪শ টাকা এবং ছাগল ১৫০ টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। গরু ৪৫০ টাকা এবং ছাগলের শতকরা ১০ টাকা হারে ক্রেতার কাছ থেকে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। আবার রশিদে খাজনা লেখার জায়গা থাকলেও সেখানে লেখা হচ্ছেনা। এছাড়া লেখনির জন্য বিক্রেতার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে আরো ২০ টাকা।

জেলার বদলগাছী উপজেলার ভরট্ট গ্রামের আতিকুর রহমান বলেন, তিনি একটি বোকনা গরু বিক্রি করেছেন। লেখনি বাবদ ২০ টাকা দিতে হয়েছে।মহাদেবপুর উপজেলার পাতনা গ্রামের খাইরুল বলেন, ৩২ হাজার টাকা দিয়ে একটি বোকনা গরু কিনেছেন। তার কাছ থেকে খাজনা বাবদ ৪৫০ টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্তু রশিদে খাজনার জায়গায় কোন টাকা লিখা হয়নি।আব্দুর রহমান নামে এক পশু ব্যবসায়ী বলেন, সরকারি যে নিয়ম আছে সে মোতাবেক কোন টাকা নেয়া হয়না। এক প্রকার জোর করেই টাকা আদায় করা হয়ে থাকে। আবার রশিদের খাজনার জায়গা থাকলেও টাকার অঙ্ক লিখা হচ্ছেনা।হাটে রশিদ লেখনি মান্নান হোসেন বলেন, সচরাচর ৪শ টাকা নেয়া হয়। তবে ঈদের জন্য ৫০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। খাজনা আদায়ের জায়গায় টাকার অঙ্ক লিখা হচ্ছেনা কেন তার কোন উত্তর তিনি দেননি। হাটের খাজনা আদায়ের তদারকারী মুক্তার হোসেন বলেন, খরচাপাতির জন্য সরকারি টোল থেকে একটু বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে।

ভীমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রামপ্রসাদ ভদ্র বলেন, হাটটি যেভাবে ইজারা হয়েছে তা আমার কাছে সন্দিহান মনে হচ্ছে। তবে হাটটি ইজারার জন্য যে টাকা নির্ধারন করা হয়েছিল তার থেকে অর্ধেক টাকা দিয়ে অনেক পরে ইজারা দেয়া হলো। এতে করে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলো। সেই সাথে ইউনিয়ন পরিষদও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হলো।

হাট ইজারাদার এনামুল হক সুজন বলেন, গত ১৪২৪ সালেও হাট ইজারা নিয়েছিলাম। সেসময় লোকসান গুনতে হয়েছে। পরের বছর অন্য একজন বেশি টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিয়েছিল। এ বছর (১৪২৬ সাল) আবারও হাটটি ইজারা নিয়েছি। তবে উপজেলা প্রশাসন থেকে এখনো কোন চিঠি পাইনি। তবে সিন্ডিকেটের বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। সাক্ষাতে দেখা করতে বলেন।

মহাদেবপুর উপদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, যদি অতিরিক্ত খাজনা (টোল) আদায়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে হাট ইজারার একটি চিঠি পেয়েছি। ইজারাদারকে টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠানো হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই