তারিখ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

জুতা সেলাই করে আশি বছর গণেশ রবিদাসের

জুতা সেলাই করে আশি বছর গণেশ রবিদাসের
[ভালুকা ডট কম : ০৭ সেপ্টেম্বর]
পল্লী কবি জসীমউদ্দীন’র আসমানী কবিতার চরণধরে- আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে, তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে। পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক'খান হাড়, সাক্ষী দেছে অনাহারে কদিন গেছে তার।

ভালুকা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে গ্রাম নির্ভর নব্বই বছর বয়সী আসমানীর পবিারের মত গনেশ রবিদাসের একটি পরিবার।তিন ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার।বড় ছেলের মৃত্যুর পর দুই নাতনীসহ সংসারে সদস্য সংখ্যা বেড়ে এখন খুবই কষ্টে সংসার চালাতে হচ্ছে।দারিদ্র্যের কাছে হার মানেনি নব্বই বছর বয়সী গনেশ রবিদাস। লড়াই সংগ্রামের জীবনে শক্ত করে মাটি আকড়ে আছেন এ বৃদ্ধ। পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য  ১০ বছর বয়স থেকেই জুতা সেলাইয়ের কাজ করছেন তিনি।বর্তমানে পৌরসভার ফায়ার সার্ভিস মোড়ে রাস্তার পাশে পলিথিন আর বাঁশের কঞ্চি দিয়ে আসমানীর ঘরের মতো ছোট্ট একটি ঘর নির্মান করে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছেন।বৃষ্টি আসলে ঘরে পানি পড়ে,আর একটু বাতাস আসলে ঘরটি এদিক-সেদিক দুল খায়। ঘরটি তিন রাস্তার মোড়ে তাই দেখতে প্রতিদিনই লোকে ভিড় জমায়।

একান্ত সাক্ষাতকারে গনেশ রবিদাস বলেন ১০ বছর বয়স থেকেই মামার সঙ্গে পাকিস্তান আমলে গফরগাঁও উপজেলায় কারখানায় নতুন জুতা তৈরির কাজ করেছেন। স্বাধীনতার  পরে নিজ এলাকা ভালুকায় বিভিন্ন রাস্থার মোড়ে মোড়ে ফুটপাতে এখনও জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি। কোন রকমে সংসার চালাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্থানীয় কিছু দুষ্টু লোকেরা আমার বাবার ভিটে মাটি কেড়ে নেয়।বিভিন্ন জায়গায় বিচার দিয়েও বিচার পাইনি।সেই থেকেই পরের জায়গায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাস করছেন।এখন আমার এ বয়সে বিশ্্রামের সময় আর জুতা সেলাই করে পরিবারের ভরনপোষন করতে হচ্ছে।দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করতে করতে কোনো সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারিনি।  জুতা সেলাই আর পলিশ করে যে আয় হয় তা দিয়ে চালাতে হয় বাড়ি ভাড়া আর খাওয়া খরচ। শুধু তাই নয় এ কাজ করেই  প্রতিমাসে  স্ত্রীর ওষুধের  টাকাও যোগান তিনি।

রবিদাশের স্ত্রী সমুদরী রবিদাস বলেন , দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্যই কষ্ট করতে হয়।আমি-ত এখন কাজ করতে পারিনা মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে যা সাহায্যে পাই তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। সরকার আমাদের দুজনকেই বয়স্ক ভাতা দিচ্ছে।যদি সরকারের পক্ষ থেকে জুতা সেলাইয়ের আধুনিক কিছু মেশিন পাইতাম তাহলে হয়ত বাকী জীবনটা কাজ করে আমাদের সংসার ভালই কাটত।

এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ কামাল বলেন এমন বয়সের ব্যক্তিদের সরকারের পক্ষ থেকে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।আর যদি সরকারের পক্ষ থেকে জুতা সেলাইয়ের আধুনিক মেশিন বা কোন বাজেট আসে তাহলে প্রয়োজন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করব।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই