তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশনে প্রয়োজন আধুনিক অবকাঠামো

সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশনে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যাত্রী সেবারমান, প্রয়োজন আধুনিক অবকাঠামো
[ভালুকা ডট কম : ০৬ নভেম্বর]
নওগাঁ ও বগুড়া জেলার মোহনায় অবস্থিত সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশন। উত্তরাঞ্চলের মধ্য ঐতিহ্যবাহি রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশন।

স্টেশন সূত্রে জানা,  ব্রিটিশ শাসনের সময় ১৯২০সালে স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত এই স্টেশনে আধুনিকতার কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। তবে বর্তমানে রেল বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ও স্টেশন কর্তৃপক্ষের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং স্টেশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেষ্টায় স্টেশনে ফিরে আসতে শুরু করেছে মনোরম পরিবেশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য এই স্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিদিন মিটার ও ব্রডগেজের প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রেন চলাচল করে। সেই তুলনায় পরিবর্তন আসেনি স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়নে।

তবে স্টেশন মাস্টার ও সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচেষ্টায় স্টেশনে কমেছে পকেটমারদের দৌরাত্ম, নেই কোন ছিচকে চোরের দাপট। একাধিক প্লাটফর্মে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্টেশনের আশেপাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। দিনের একাধিকবার পরিস্কার করা হয় স্টেশনটি। সম্প্রতি স্টেশনের ১, ২, ৩ ও ৪নং প্লাটফর্মের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীদের বসার জন্য স্টেশন মাস্টারের চাহিদা মাফিক রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের চিফ কর্মাশিয়াল ম্যানেজারের বরাদ্দকৃত আধুনিক মানের ১শত ২০টি চেয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও স্টেশনে ভিআইপি যাত্রীদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে বিশ্রামাগার। আরো আধুনিকায়ন করা হয়েছে ১ম শ্রেণির যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার। এতে করে দিন দিন স্টেশনে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিগত সময়ের চেয়ে রাজস্ব আদায়ও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবুও স্টেশনটি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জড়িত। প্লাটফর্মের ছাউনির টিনগুলো মরিচায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পার পেলেও বর্ষা মৌসুমে মরিচা ধরা টিনের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে হয় প্লাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের। যদি এই টিনগুলো অতিদ্রুত সংস্কার করা না হয় তাহলে যাত্রীদের বসার জন্য স্থাপন করা দামী চেয়ারগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাবে। সর্বোপরি স্টেশনের এই মান ধরা রাখা ও মান আরো বৃদ্ধি করার জন্য স্টেশনের জরার্জীন ভবনগুলো ভেঙ্গে আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ করা ও প্রয়োজন সংখ্যক জনবল নিয়োগদানে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতনমহল।

স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করা যাত্রী সাইফুল ইসলাম, বেলাল খন্দকারসহ অনেকেই বলেন স্টেশনের পরিবেশ দিন দিন সুন্দর হচ্ছে। একসময় এই স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করা কষ্টসাধ্য ছিলো। কারণ স্টেমনের আশেপাশে রাখা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ, পকেটমার ও ছিচকে চোরের দৌরাত্ম ছিলো স্টেশনের সর্বত্র। কিন্তু এখন স্টেশনে অনেকটাই ছিমছাম পরিবেশ বিরাজ করছে। যাত্রীদের বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে চেয়ার। আধুনিকায়ন করা হয়েছে যাত্রীদের বিশ্রামাগার। তবে এতটুকুই কিন্তু যথেষ্ট নয়। আরো প্রয়োজন প্রতিটি পদে পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল। এছাড়াও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষদের স্টেশনের সেবার মান বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। আর স্টেশনের পরিবেশ ধরে রাখার দায়িত্ব শুধু স্টেশন কর্তৃপক্ষ,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একার নয়, স্টেশনে আসা যাত্রী ও স্থানীয়দের দায়িত্বও অনেক বেশি। কারণ যাত্রীরা এই স্টেশনে ক্ষণস্থায়ী অতিথি কিন্তু স্থানীয়রা স্থায়ী বাসিন্দা।

সান্তাহার জংশন রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম ডালিম বলেন স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করতে সরকার ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষরা বদ্ধ পরিকর। গ্রহণ করা হচ্ছে নানামুখি পদক্ষেপ। তবে স্টেশনে জনবল সংকট সবচেয়ে বড় সমস্যা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্টেশনে ৪ভাগের ৩ভাগ জনবল থাকলেও যাত্রী সেবার মান আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব হতো। যেটুকু জনবল আছে আমি চেষ্টা করি তাদের সহযোগিতা নিয়ে স্টেশনকে তরতাজা রাখার।

তিনি আরো বলেন স্টেশনের অবকাঠামোগত সংস্কারের পাশাপাশি অতিদ্রুত প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণ জনবল নিয়োগ দেওয়া। কারণ প্রতিটি পদের জনবল ছাড়া স্টেশনের এই ছিমছাম পরিবেশ ধরে রাখা ও রক্ষনাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। অনেক সময় একই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দিনরাত ডিউটি করতে হয়। স্টেশনের পরিবেশ, যাত্রীসেবার মান ও রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব শুধু স্টেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরই নয় স্টেশনকে ঘিরে স্থানীয়, রাজনৈতিক ও সকল শ্রেণির মানুষের পজেটিভ ভ’মিকা ও সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। সকলের সম্বলিত সহযোগিতা ও চেষ্টায় এই স্টেশনকে আধুনিক মানের যাত্রী সেবার স্থান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। আর আমি সব সময় আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে স্টেশনের নানা সমস্যা তুলে ধরার চেষ্টা করে আসছি।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই