তারিখ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় আমন কাটায় ব্যস্ত কৃষক

সুগন্ধে ভরা সোনালী ধান চিনিগুড়ি
ভালুকায় আমন কাটায় ব্যস্ত কৃষক
[ভালুকা ডট কম : ২৪ নভেম্বর]
ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আমন ধান কাটায় মাঠে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। বাড়ীর উঠানে জমতে শুরু করেছে ধানের আঁটি। মাঠে মাঠে চলছে দলবদ্ধ শ্রমিকদের দিনভর পাকা ধান কেটে আঁটি বাঁধা আর দিনশেষে গৃহস্থের উঠানে পৌছে দেওয়া। গৃহস্থ বাড়ীর বউঝি’রা উঠান তৈরী, ধান সিদ্ধর চুলা ও মাচা তৈরী করতে বিরামহীন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে নতুন ফসল ঘরে তুলে গোলা ভরার রঙ্গীন সপ্নের চঞ্চলতা। গৃহস্থ বাড়ীতে কাজের সহযোগী হিসেবে যোগ দিচ্ছেন গ্রামের মহিলা শ্রমিকরা।

আমন মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হয়। গত কয়েক বছর যাবৎ অধিক ফলনসীল উন্নত জাতের ধানের আবাদ করে আশানুরুপ ধান পেলেও উৎপাদন খরচের তুলনায় মুনাফা না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে ধান চাষে অনিহা সৃষ্টি হয়। উৎপাদন কম হলেও অধিক মূল্যে বিক্রয়োপযোগী সুগন্ধি ধান চাষে বেশী আগ্রহী হচ্ছেন কোন কোন এলাকার কৃষক। যেমন সোনলী বরণ ব্রি ধান ৩৪ সুগন্ধি চিনিগুড়ি, স্থানীয়জাত কালিজিরা, গুডি শাইল, আমন শাইল ইত্যাদি সুগন্ধি ধানের চিকন চালে বাঙ্গালীদের ঈদ পার্বন আচার অনুষ্ঠানে আদি কাল হতে রিচফুড পোলাও,ফিন্নি, ক্ষীর পায়েশ ইত্যাদি মুখরোচক খাবার তৈরী হয়। যে জন্য এসব সুগন্ধি চালের চাহিদা রয়েছে ব্যপক।

পালগাঁও গ্রামের কৃষক গ্রাম্য ডাক্তার আমজাদ হোসেন জানান এ বছর তিনি এক একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে ৮ কাঠা জমিতে সুগন্ধিজাত চিনিগুড়ি ও ৮ কাঠায় স্থানীয় জাতের আবাদ করেছেন। তিনি জানান উফসী ও স্থানীয় জাত ধানের বাজার মুল্য বর্তমানে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ দরে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে। অথচ সুগন্ধি ধান চিনিগুড়ি প্রতিমণ ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কাঠায় উফসী ও স্থানীয় জাত উৎপাদন আসে ৩ থেকে ৪ মণ আর বিক্রয় হয় ২০০০ হতে ২৬০০ টাকা।

অপর দিকে সুগন্ধি ধান চিনিগুড়ি প্রতি কাঠায় উৎপাদন আসে দুই থেকে আড়াই মণ দাম পাওয়া যায় ৩৭৫০ টাকা হতে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত। এজন্য স্থানীয় ও উফসী জাতের পাশাপাশি সুগন্ধি জাতের ধান চাষ অধিক লাভ জনক বলে তিনি মনে করেন। তবে এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট হতে নতুন উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি ধান চাষে কৃষকদের সচেতন করে তোলা প্রয়োজন।

তিনি জানান অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর আমণ আবাদে রোগবালাই তেমন ছিলনা, বৃষ্টি হয়েছে উপযুক্ত সময়ে যে কারনে আমন ধানের ফলন ভার হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিকদের মজরী ৪০০ টাকা রোজ হওয়ায় সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।

ভালুকা উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ ইউনিয়নেই কমবেশী আমন ধানের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ভালুকা, মল্লিকবাড়ী, ভরাডোবা, বিরোনিয়া, মেদুয়ারী, ধীতপুর ও রাজৈ ইউনিয়ন নদী খাল বিলের সংখ্যা বেশী হওয়ায় এসব ইউনিয়নে আমন আবাদ তুলনামূলক কম হয়। উথুরা, কাচিনা, ডাকাতিয়া ও হবিরবাড়ী ইউনিয়নের  জমি উঁচু ও সমান্তরাল হওয়ায় এসব এলাকায় আমন আবাদ বেশী হয়।

হবিরবাড়ী ইউনিয়নের হবিরবাড়ী ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান এ বছর ব্রী-ধান ৪৯, ৫১ ও ৫২, ৭১ সহ স্থানীয় আরও কিছু জাতের আমন ধানের আবাদ হয়েছে। তার ব্লকে ৩৬০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। রোগ বালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪৪০ হেক্টর এর মধ্যে উফসি ১৭ হাজার ৯৮০ হেক্টর, স্থানীয় ২ হাজার ২৭৫ হেক্টর ও হাইব্রিড ১৮৫ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫৬৫ মেট্রিক টন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই