বিস্তারিত বিষয়
আজ ১৪ ডিসেম্বর আত্রাই,সান্তাহার হানাদার মুক্ত দিবস
আজ নওগাঁর আত্রাই হানাদার মুক্ত দিবস
[ভালুকা ডট কম : ১৪ ডিসেম্বর]
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত এলাকা আত্রাই উপজেলা। এই উপজেলা মূলত উত্তরবঙ্গের মধ্য মৎস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বরের বাকী আর ২দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ডিসেম্বর আত্রাই বাসীর জন্য একটি স্মরনীয় দিন।আজকের এই দিনে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।
স্বাধীনতার সংগ্রামে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মাতৃভূমিকে শত্রু মুক্ত করার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ৯মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর নওগাঁর আত্রাই উপজেলাবাসী আজকের এ দিনে শত্রুমুক্ত হয়ে বিজয় উল্লাস আর “জয় বাংলা,বাংলার জয়” জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিল উপজেলার আকাশ-বাতাস। এ এলাকা পাক হানাদার মুক্ত করতে অসংখ্য জীবন বলিদান এবং কত অসহায় মা বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছিল সেই ভয়াবহ দিনে তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানে না। এছাড়াও পঙ্গুত্বের অভিশাপ আর মা-বাবা, স্বামী, স্ত্রী, ভাই, বোন হারানো অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনও অনেক নারী-পুরুষ বেঁচে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের খোজ-খবর রাখেনি।
সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান বলেন সেই সময় চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো ছিলো না। রেলপথই ছিলো সহজ ভাবে চলাচলের জন্য সুবিধাজনক বাহন। তাই আমরা বুদ্ধি করে ৭১সালের ৬সেপ্টেম্বরে আত্রাই-সান্তাহার অংশের সাহাগোলা নামক স্থানে সাহাগোলা রেল ব্রিজটি ধ্বংস করে দিই। এতে করে নাটোর থেকে পাক-বাহিনীর সেনা বহনকারী একটি স্পেশাল ট্রেন রাতে লাইট বন্ধ করে ওই ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনটি ওই ব্রিজের নিচে পড়ে যায়। এতে করে পানিতে ডুবে অনেক পাক-সেনা নিহত হয়। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় জয় ছিলো। এরপর পাক-বাহিনীরা যুদ্ধে আমাদের সঙ্গে না পেরে নাটোরের অভিমুখে পালিয়ে যায়। আর আমরা এভাবেই অনেকটা কম পরিশ্রম ও কম হানাহানির মাধ্যমে ১৪ডিসেম্বর আত্রাই উপজেলাকে হানাদার মুক্ত করি।#
আজ সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর মুক্ত দিবস
নওগাঁর সীমান্ত ঘেষা শহর সান্তাহার। আজ ১৪ ডিসেম্বর অবাঙ্গলী (বিহারী) অধ্যুষিত সান্তাহার রেলওয়ে জংশন শহর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৩ দিকের আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে অবরুদ্ধ সান্তাহার জংশন শহর কে মুক্ত করেন। স্বাধীনতার যুদ্ধে সান্তাহার জংশন শহরের ইতিহাস গৌরবময়।
দেশের বৃহত্তম অবাঙ্গালী (বিহারী) অধ্যুষিত শহর হওয়ায় এখানে পাক হানাদাররা মূল ঘাঁটি স্থাপন করে। এ শহর থেকে পাক সেনারা নিয়ন্ত্রণ করতো গোটা উত্তরাঞ্চল। এখানকার পাক হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের পাশাপাশি অবাঙ্গালীদের (বিহারী) অত্যাচার ছিল অবর্ণনীয়। শহরে দীর্ঘ ৯মাস কোন বাঙ্গালীকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। বাঙ্গালী দেখা মাত্রই চালানো হতো নির্মম নির্যাতন, করা হতো হত্যা। প্রত্যেক বিহারী ছিল অস্ত্রে সজ্জিত। তারা শহরের পাশের গ্রামগুলোতে লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করতো। বাঙ্গালীরা ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের গৌরবান্বিত দিনগুলো উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আজো জল জল করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সান্তাহার শহরও জ্বলে উঠেছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তার সক্রিয় বৈশিষ্টে প্রথম থেকেই শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ। সান্তাহার শহরের বৃহত্তর এলাকা জুড়ে চালানো হয় গেরিলা পদ্ধতিতে আক্রমণ।
১০ডিসেম্বর থেকে কমান্ডার ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম, মুনছুর আলী, এল কে আবুল হোসেনসহ অন্যান্য কমান্ডারদের নেতৃত্বে প্রায় ৪শতাধিক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা সান্তাহারের দক্ষিণ, উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থান নিয়ে খন্ড খন্ড ভাবে সান্তাহার শহরে অবস্থিত পাক হানাদারদের উপর হামলা চালিয়ে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধারা তিন দিকের রেল লাইন উপড়ে দিয়ে শত্রুদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
১২ ডিসেম্বর কায়েতপাড়ার নিকট রেল লাইন উপড়ে ফেলতে গিয়ে সুজিত নামের এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ ১৪ডিসেম্বর।তিন দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমনের মুখে এই দিন পাক হানাদাররা সান্তাহার শহর ছেড়ে নওগাঁ হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘ ৯মাস যুদ্ধের পর এই দিনে সান্তাহারে বিজয়ের পতাকা উড়ায়। এই দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- কালিয়াকৈরে ফসলি জমি কেটে মাটি ব্যবসা [ প্রকাশকাল : ২৪ মার্চ ২০২৪ ০১.০০ পুর্বাহ্ন]
- রাণীনগরে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ২০ মার্চ ২০২৪ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- ভারত থেকে এলো ৪০০ মেট্রিক টন আলু [ প্রকাশকাল : ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৩.২১ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে চেয়ারম্যানের ঘরের তালা ভাঙ্গলেন ইউএনও [ প্রকাশকাল : ১৬ মার্চ ২০২৪ ০৩.১০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় পরীক্ষার আগেই টাকা নেওয়ার অভিযোগ [ প্রকাশকাল : ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ১১ মার্চ ২০২৪ ০৫.১৫ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় গণহত্যা-নির্যাতন বিষয়ক সেমিনার [ প্রকাশকাল : ১০ মার্চ ২০২৪ ০৫.১০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন [ প্রকাশকাল : ০৮ মার্চ ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে যুব উৎসব পালিত [ প্রকাশকাল : ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৯.০০ পুর্বাহ্ন]
- নওগাঁয় ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু [ প্রকাশকাল : ০৩ মার্চ ২০২৪ ০১.৩০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে ভোটার দিবস পালন [ প্রকাশকাল : ০২ মার্চ ২০২৪ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় বিসিক উদ্যোক্তা মেলা শুরু [ প্রকাশকাল : ০১ মার্চ ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- কারাগারে লিগ্যাল এইড কর্ণার উদ্বোধন [ প্রকাশকাল : ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৫.০০ পুর্বাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস পালিত [ প্রকাশকাল : ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২.১০ অপরাহ্ন]
- মনপুরায় জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত [ প্রকাশকাল : ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]