তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গৌরীপুরে সাইবার ক্রাইমার ৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর

গৌরীপুরে সাইবার ক্রাইমার লাজুক ও দুই সহযোগীর রিমান্ড মঞ্জুর
[ভালুকা ডট কম : ২৭ জানুয়ারী]
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় সাইবার ক্রাইমার মাদক সম্্রাট বিতর্কিত স্কুল শিক্ষক কয়েস আল কায়কোবাদ লাজুক ও তার দুই সহযোগীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (২৬ জানুয়ারী) ময়মনসিংহ আদালতের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাহবুবা আক্তার মামলার শুনানী শেষে লাজুকের ৫ দিন এবং তার দু’সহযোগী শামছুজ্জামান বাপ্পি (২৫), তৌহিদা আক্তার রুমাকে (৩২) ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরীপুর থানার এসআই নজরুল ইসলাম জানান, এর আগে ২০ জানুয়ারী রাতে গৌরীপুর পৌর শহরের বালুয়াপাড়া এলাকা থেকে লাজুক (৪০) ও তার দু’সহযোগীকে মাদক সেবন অবস্থায় ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে গৌরীপুর থানার পুলিশ।

এদিকে উপজেলার ধূরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লাজুককে ২২ জানুয়ারী চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার  মোঃ শফিউল হক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন।

গৌরীপুর থানার এস আই নজরুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উল্লেখিত তিনজনের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। বিজ্ঞ আদালত ররিবার শুনানী শেষে লাজুকের ৫ দিন ও দুই সহযোগীর ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিকা পারভীনের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও মাদক মামলাসহ একাধিক মামলায় ২০ জানুয়ারী রাতে লাজুক (৪০) এবং তার দু’সহযোগী শামছুজ্জামান বাপ্পি (২৫), তৌহিদা আক্তার রুমাকে (৩২) ইয়াবাসহ গ্রেফতার জেল হাজতে প্রেরণ করে গৌরীপুর থানার পুলিশ। এদিকে উল্লেখিত এ ৩ জনকে গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাহসী ভূমিকার প্রশংসা ও পুলিশের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতিসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন।

গ্রেফতারকৃত কয়েস আল কায়কোবাদ লাজুক উপজেলার ধূরুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে, তৌহিদা আক্তার (রুমা) সতিষার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে, শামছুজ্জামান বাপ্পি (রুমার কথিত স্বামী) বোকাইনগর অষ্টগড় গ্রামের আবুল বাসারের ছেলে।

গৌরীপুর থানার ওসি মোঃ বোরহান উদ্দিন জানান, লাজুক একজন সাইবার ক্রাইমার, মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। লাজুক ও তার সহযোগীরা তাদের নিজস্ব ফেসবুক আইডিসহ বিভিন্ন ফেইক আইডি দিয়ে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের লোকজনের বিরুদ্ধে নানা অশ্লীল আপত্তিকর মন্তব্য এবং এডিট করা অশ্লীল ছবি পোস্ট করে মানসম্মান ক্ষুন্নসহ তাঁদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। এ চক্রের কু-কর্মের কাছে সবাই ছিল অসহায়, কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পেতনা।

তিনি বলেন, সর্বশেষ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীনকে নিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল ভাষায় বিভিন্ন মন্তব্য ও ফটোশপে এডিট করা আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে এ চক্রটি। এ ঘটনায় সোমবার (২০ জানুয়ারী) রাতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখিত ৩ জনকে মাদক সেবন অবস্থায় ২১ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে মঙ্গলবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
উপজেলা শিক্ষা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক লাজুক কিছুদিন আগে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চারজন শিক্ষককে বদলি করার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করেছিলেন। এতে রাজি না হওয়ায় ১৯ ও ২০ জানুয়ারী লাজুক তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি ও তার নারী সহযোগী রুমার আইডির মাধ্যমে ওই কর্মকর্তা নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য এবং এডিটিং করা আপত্তিকর ছবি আপলোড দেন। শুধু ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ওরা কান্ত হয়নি, তারা এ শিক্ষা কর্মকর্তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে বিভিন্ন অশ্লীল মন্তব্য করেন।

সূত্র আরো জানায়, লাজুক প্রায় দেড় বছর যাবত স্কুলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস না নিয়ে ক্ষমতার দাপটে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন উত্তোলন করেন। স্কুলের এসএমসি, শিক্ষকরা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিসের কর্মকর্তার লাজুকের এই অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের সাহস পেতেননা। গ্রেফতারের পর লাজুকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের তথ্য বেরিয়ে আসছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, লাজুক ছাত্রজীবনে ঈশ্বরগঞ্জ কলেজের ছাত্র সংসদের এজিএস ছিলেন। দীর্ঘ সময় রামগোপালপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরবর্তীতে চাকুরিজীবনে প্রবেশ করে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। মাদকসেবনের পাশাপাশি এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হন। এলাকায় গড়ে তুলেন নিজস্ব একটি চক্র। এসবের পাশাপাশি লাজুক জড়িয়ে পড়েছিল সাইবার ক্রাইমে। সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে তিনি মানুষকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন।

তারা আরো জানান, লাজুককে এসব কু-কর্মে সহযোগিতা করে আসছিল মাদকসেবী নারী রুমা ও তার কথিত স্বামী শামছুজ্জামান বাপ্পি। লাজুক নিজের ফেসবুক ও সহযোগী রুমার আইডিসহ বিভিন্ন ফেইক আইডি দিয়ে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তাসহ অন্যান্য লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা আপত্তিকর মন্তব্য ও অশ্লীল পোস্ট করে আসছিল। রুমাকে দিয়ে অনেক লোককে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রটি। এদের কুকর্মে মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েছিল। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অপরাধ জগত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই