তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রায়গঞ্জে শতাধিক তাঁত কারখানা

পন্য সরবরাহে ভোগান্তি
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রায়গঞ্জে শতাধিক তাঁত কারখানা,পাঁচ হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার আশংকা   
[ভালুকা ডট কম : ১১ মার্চ]
শহরে পন্য সরবরাহে সুগম রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার রায়গঞ্জে শতাধিক তাঁত কারখানা বন্ধ হতে বসেছে।  এতে প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ার আশংকায় ভূগছেন। উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের তাঁত শিল্পাঞ্চল হিসাবে খ্যাত কুটারগাঁতী ও হামিদনদামিন  গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে ঐ এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহাল হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগের  করুণ চিত্র।

ঐগ্রামের প্রবীনব্যক্তি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল আলম জানান - খামারগাঁতী-গাড়–দহ ৬ কিঃ মিঃ দীর্ঘ সড়ক কুটারগাঁতী ও হামিনদামিন গ্রামের মধ্য দিয়ে রায়গঞ্জ-সিরাজগঞ্জ সড়কের সাথে যুক্ত হয়েছে।  এ সড়কের পশ্চিম গাড়–দহ মাঝিপাড়া এলাকায় বৃষ্টি হলে হাটুপানি জমে যেত। নিরুপায় এলাকাবাসী নিজ খরচে ইট খোয়া রাবিশ দিয়ে সেখানে ভরাট করে মেরামত করার পরও কাঁচা এই রাস্তায় বর্ষা মৌসুমে চলাচল করা যায় না। এছাড়াও খামারগাঁতী থেকে কুটারগাঁতী পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিঃ মিঃ কাঁচা রাস্তা বিগত কয়েক যুগেও উল্লেখযোগ্য কোন সংস্কার হয়নি। ফলে রাস্তার স্থানে স্থানে মারাত্মক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে। কাদা-পানিতে পিচ্ছিল পথে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েন আশপাশের ৫/৬ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এবং প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হন এদুই গ্রামে অবস্থিত ৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা ও পাশাবর্তী ভাতহাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা।  কুটারগাতী মসজিদে আসতেও মুসল্লিদের এক হাটু কাদা মাড়িয়ে আসতে হয়।  কুটারগাঁতী ও হামিনদামিন গ্রাম থেকে জেলা শহরের দুরত্ব প্রায় ১৬ কিঃ মিঃ। এটুকু পথ পাড়ি দিতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় ব্যয় হয়। ভাড়া লাগে চার পাঁচ গুণ। অপরদিকে কুটারগাঁতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উপজেলা সদরের সংযোগ সড়ক লক্ষ্মীকোলা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিঃ মিঃ রাস্তার প্রায় ৩ কিঃ মিঃ রাস্তার বেহালদশা। এরমধ্যে ঐ গ্রামের নুরু মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিঃ মিঃ রাস্তার সিংহভাগ ধ্বসে গেছে। যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা পায়ে হেটে এ পথে চলাচল করাই দুরূহ।

যাতায়াতের এই দুরাবস্থার কারণে এই গ্রামের তাঁত কারখানায় উৎপাদিত লুৃঙ্গি, গামছাসহ অন্যান্য কৃষিপন্য শহর ও হাট-বাজার নিয়ে যেতে অনেক বেশি অর্থ ও সময় ব্যয় হওয়ার কারণে এ গ্রামের তাঁত ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সুগম এলাকার তাঁত ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেন না এই দুই শিল্প গ্রামের তাঁত ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে লোকসান গুনতে গুণতে তাঁতের ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা আর টিকে থাকতে পারছি না। অচিরেই আমাদের কারখানা গুলো হয়তো বন্ধ করে দিতে হবে,হতাশার সুরে কথাগুলো বললেন- ঐ গ্রামের বড় তাঁত কারখানা তালুকদার কটেজের মালিক মুক্তা তালুকদার। একই গ্রামের সেঞ্চুরি উইভিং ফ্যাক্টরীর মালিক আব্দুল মোন্নাফ ও হামিনদামিন গ্রামের তাঁত কারখানা ইছামতি কটেজের মালিক মকলেছুর রহমান বলেন- আমরা এক একটি কারখানা থেকে ভ্যাটসহ প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল দেই। রঙ, সূতাসহ বিভিন্ন কাঁচামাল কিনতে ট্যাক্স দেই। এই উপজেলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ ১০ গ্রাম থেকে যা রাজস্ব আদায় হয় তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি রাজস্ব আদায় হয় আমাদের গ্রাম থেকে। অথচ এই বিপুল উন্নয়নের দেশে আমরা যেন পরবাসীর মত উপেক্ষিত।

এব্যাপারে ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের চেয়রম্যান গোলাম সরোয়ার লিটন বলেন- রাস্তাগুলি এলজিইডি’র। জনদুর্ভোগ লাঘব ও এলাকার উন্নয়নের জন্য তিনি ধর্মদাসগাঁতী হাটখোলা থেকে খামারগাঁতী হাটখোলা হয়ে কয়ড়া শিমূলতলা পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ  এবং রৌহা হাসিল বটতলা থেকে বামনভাগ হাটখোলা পর্যন্ত ৪ কিঃ মিঃ রাস্তার প্রস্তাবনা দিয়েছেন। এই ৪ কিঃ মিঃ রাস্তার মধ্যে মাত্র ২কিঃ মিঃ রাস্তার টেন্ডার হয়েছে। বামনভাগ হাটখোলা থেকে গাড়–দহ পর্যন্ত আরো ১কিঃ মিঃ রাস্তা রাস্তার সংস্কার ও পাকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন। এসব রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলে তাঁত শিল্পাঞ্চল কুটারগাঁতী ও হামিনদামিনসহ  সহ এলাকার সকল গ্রামবাসীই উপকৃত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিলে রাস্তার প্রয়োজনীয় কাজ হয়তো অনেক আগেই সম্পন্ন করা যেত।

এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল বাছেদ বলেন- রায়গঞ্জ উপজেলার জন্য চলনবিল প্রকল্পে মোট ১৭০ কিঃ মি: রাস্তার প্রস্তাবনা ঊধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠানো হয়েছে। এগুলো অনুমোদন হলে শুধু ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন নয়, পুরো উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই