তারিখ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে কৃষি উপকরণ বিতরণে অনিয়ম

রাণীনগরে কৃষি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ,প্রতারিত হচ্ছেন প্রান্তিক কৃষক
[ভালুকা ডট কম : ১২ আগষ্ট]
নওগাঁর রাণীনগরে কৃষকদের প্রদান করা কৃষি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণে চরম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফারহানা নাজনীনের বিরুদ্ধে। ফলে কৃষকরা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি প্রকল্প সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের গৃহিত লক্ষ্য শতভাগ পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  
    
সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের প্রধান ফসল চাষের পাশাপাশি তেলফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি আমন মৌসুমে স্বল্প জীবনের তেল ফসল চাষে সারা দেশের মতো রাণীনগর উপজেলায় ৪৫টি প্রদর্শনীর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৫জন কৃষক বিনামূল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ পাবেন। প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে একটি প্রদর্শনীর জন্য একজন কৃষক ২৫কেজি ইউরিয়া, ২০কেজি ডিএপি, ১৫কেজি পটাশ ও জিপসাম এবং ১কেজি দস্তা সার পাবেন। অথচ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার প্রতিটি প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দকৃত সারের অর্ধেক সার ইতিমধ্যই উপজেলার বরাদ্দপ্রাপ্ত অধিকাংশ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার পার্শ্ববর্তি উপজেলাসহ সারা দেশের বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলাতে প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে প্রদর্শনীর কৃষকরা সার ও অন্যান্য উপকরণ সঠিক পরিমাণে পেলেও রাণীনগর উপজেলার কৃষকদের মাঝে ১০কেজি ইউরিয়া, ৭কেজি ডিএপি, ৬কেজি পটাশ, সাড়ে ৮কেজি জিপসাম সার দেয়া হয়েছে। এমন বিভাজনে উপজেলার কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তা অপরিকল্পিত ভাবে তালবীজ রোপন করাসহ বিভিন্ন কৃষি কর্মকান্ডগুলো দায়সারানো ভাবে সম্পন্ন করে আসছেন।
    
তথ্য অনুসন্ধানে প্রদর্শনীর জন্য খাতায় তালিকাভুক্ত অনেক কৃষকের প্রদান করা মুঠোফোনে ফোন দিলে নামের সঙ্গে মিল পাওয়া গেলেও জানা যায় যে কারো বাড়ি রংপুরে আবার কারো বাড়ি কুড়িগ্রামে। আবার অনেক কৃষক তালিকাভুক্ত হলেও বরাদ্দে নাম নেই, আবার অনেকেই জানেন না যে প্রদর্শনীর জন্য তাকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা অনেকটাই নিজের ইচ্ছে মাফিক নাম, ঠিকানা ও মুঠোফোনের নম্বর দিয়ে দায়সারানো নামের তালিকা তৈরি করে প্রকল্পের সারসহ অন্যান্য উপকরণ উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে সেই অর্থ হরিলুট করছেন বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া উগ্র মেজাজের কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফারহানা নাজনীনের আচরণে খুশি নন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অফিসে সেবা নিতে আসা উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির সেবা গ্রহিতারা।

শুধু তাই নয় তিনি এই অফিসে যোগদানের পর থেকে গনমাধ্যমকর্মীরা কৃষি সম্পর্কিত কোন তথ্য নিতে তার কাছে গেলে তিনি সেই তথ্য না দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করেই চলেছেন। তথ্য না দিয়ে তিনি এই তথ্য দিয়ে কি করবেন, কে আপনাকে এই তথ্য দিয়েছে, কি নিউজ করবেন, আমার বক্তব্য কি দিবেন ইত্যাদি নানা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে সাংবাদিককে হেয় করেন। বর্তমানে উপজেলা কৃষি অফিস আর গনমাধ্যমকর্মীদের মাঝে এক বিশাল প্রাচীর তৈরি করেছেন কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা নাজনীন।

জানা গেছে তিনি তার অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সকলকে কোন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা না বলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। কৃষি অফিসের কেউ যদি কোন সাংবাদিকের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন কথা বলেন তাহলে পরবর্তিতে সেই ব্যক্তিকে কৃষি কর্মকর্তার কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়। এমন উগ্র আচার-আচরনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন কৃষি অফিসের ঝাড়–দার থেকে শুরু করে সকল শ্রেণির মানুষরা। উপজেলার এমন জনগুরুত্বপূর্ণ অফিসে এই ধরণের উগ্র মেজাজের অসৎ কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষিকে এগিয়ে নিতে সরকারের গৃহিত মিশন ও ভিশনকে শতভাগ সফল করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীর বরাদ্দ পাওয়া কৃষকরা জানান তারা তেলফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনীর জন্য ১০কেজি ইউরিয়া, ৭কেজি ডিএপি, ৬কেজি পটাশ, সাড়ে ৮কেজি জিপসাম সার পেয়েছেন। আবার অনেকেই কৃষকই জানেন না যে তার নামে প্রদর্শনীর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রণোদনায় আগে কৃষকরা যে পরিমাণ উপকরণ পেয়েছেন বর্তমান কৃষি কর্মকর্তা উপজেলায় যোগদানের পর সেই পরিমাণগুলো কমে গেছে বলেও জানান কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (১০জুলাই) এই বিষয়ে তথ্য ও বক্তব্য নিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফারহানা নাজনীনের কক্ষে গেলে তিনি সংবাদকর্মীকে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন ভ্যাট, আইটিসহ অন্যান্য খরচের অর্থের যোগান দেওয়ার জন্য এই প্রকল্পের সার অর্ধেক করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে কি পরিমাণ সার কৃষকদের মাঝে তিনি বিতরণ করেছেন সেই তথ্য জানতে চাইলে তিনি সেই তথ্য না দিয়ে সংবাদকর্মীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন।

এই বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরনগুলো বিতরণ করতে হবে। অর্ধেক পরিমাণে কৃষি উপকরণ বিতরণ করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই